আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের লালনপালনকারী। কিন্তু এ লালনপালনের কাজটি কি তিনি সহস্তে কিংবা কোনও অলৌকিক উপায় অবলম্বন করে করেন? এর জওয়াব হচ্ছে ‘না’। এ কাজ তিনি কোনও মিরাকল সংঘটন করে করেননা। এমনকি যার কেউ নেই তাকেও তিনি কোনও মোজেযা করে আকাশ থেকে রিযক অবতরণ করেননা। তিনি এটি করেন তারই সৃষ্ট অপর বান্দাদের মাধ্যমে। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের চোখের সামনে তা-ই প্রত্যক্ষ করছি। আমরা দেখছি, স্রষ্টার সুবিজ্ঞ এ ব্যবস্থাপনার কর্মীরা এ পৃথিবীবাসীর মধ্য থেকেই একদল মানুষ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এক সাহাবী জিজ্ঞেস করলো: “হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ কে? জওয়াবে রাসুল সা: বললেন: যে ব্যক্তি মানুষের বেশী উপকারে আসে। আবার জিজ্ঞেস করা হলো: কোন কাজ আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশী প্রিয়? রাসুল সা: বললেন: কোনো ব্যথিত অন্তরকে আনন্দিত করা, কোনো বিপদগ্রস্ত মানুষকে তার বিপদ থেকে উদ্বার করা, কারোর সাহায্যে একটি দিন অতিবাহিত করা বা শ্রম দেয়া আমার এই মাসজিদে একমাস ইতিকাফ করার চেয়ে উত্তম”। (১) পুণ্যময় এ কর্মে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধকরণে কোথাও বলা হয়েছে:
|
|||
সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে একই দিনে রোজা ও ঈদ পালনের ইস্যু নিয়ে দলাদলি এবং উম্মাহর বিভক্তি খুবই দু:খজনক। অথচ এটি (একই দিনে বিশ্বব্যাপী রোজা ও ঈদ উপযাপনের কল্পনা) একটি ভ্রান্তি বিলাস ছাড়া আর কিছুই না। সৌদী আরবের সাথে বাংলাদেশের সময়ের পার্থক্য তিন ঘন্টা। এতবড় ব্যবধান নিয়ে আদৌ কি সেদেশের সাথে মিল রেখে একই দিনে রোজা ও ঈদ উদযাপন সম্ভব? আমার দীর্ঘ সৌদী আরবের প্রবাসজীবনে (১৯৮০ থেকে ২০১৩) ঈদুল ফিতর উদযাপনের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। এর মধ্যে ৫টি ঈদের অভিজ্ঞতা হলো এরকম: এ ঈদগুলোতে প্রতিবারই ঈদের চাদের খবর এসেছে মাগরিবের ৪৫/৫০ মিনিট পর। অর্থাৎ মাগরিব অবধি যখন কোনো সংবাদ মাধ্যমেই চাদ দেখার খবর প্রচারিত হলোনা তখন আমরা ধরেই নিলাম যে, আগামীকাল ঈদ হচ্ছেনা। আমরা তারাবিহ নামাযের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কেউ কেউ এই ভেবে খুশীও হচ্ছি যে, যাক, আরও একটি মাগফিরাতের দিন আমাদের জন্যে বোনাস আর আনন্দের ঈদটাও কালই হয়ে যাচ্ছেনা। কিন্তু হঠাৎই সকলকে অবাক করে দিয়ে টেলিভিশনে, রেডিওতে ঘোষণা করা হলো যে, চাদ দেখা গেছে। আগামী কাল ঈদ হবে।
|
|||
“আম্মু, আমি নানার মতো হবো”। আবদুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট দারস শুনে মাকে এমনটাই বলতেন বালক উমার ইবন আবদিল আযিয রাহি:। (উল্লেখ্য যে, উমার ইবন আবদিল আযিয এর মা ছিলেন ইসলামের দ্বীতিয় খলিফা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুর পৌত্রী। সে হিসাবে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু তার নানা হতেন)। আল্লাহ উমারের বাল্যবয়সের তামান্নাকে পুর্ণ করেন এবং তার মাধ্যমে পৃথিবী আবারও এ অকাট্য সত্য প্রত্যক্ষ করে যে, আসলে ইসলামের আবির্ভাব ঘটেছে মানবতার কল্যাণ ও মুক্তির জন্য। কোন ব্যক্তি বিশেষ বা গোষ্ঠির আরাম আয়েশের নিমিত্ত এ দ্বীনের আগমন নয়। দুনিয়াবাসী আরও অবলোকন করে যে, মানুষকে মানুষের গোলামী বা দাসত্ব থেকে মুক্তি দিতে যে দ্বীন বা জীবন বিধান সফলতার দাবী করতে পারে তার নাম ইসলাম। মাত্র ত্রিশ মাসে তিনি তার গোটা সাম্রাজ্যের প্রতিটি শাখা প্রশাখা থেকে রাজতন্ত্রের ষাট বছরের পুঞ্জিভুত সকল আবর্জনা ও যুলুমের আখড়াগুলো পরিস্কার করে ফেলেন। ন্যায় ও ইনসাফের সুয আবারও উদিত হয় এবং তা প্রায় অর্ধ পৃথিবীকে আবারও আলোতে আলোতে ভরে দেয়।
|
|||
পিত্তথলির পাথর সাধারণত: মটরের দানার মতো হয়। তবে এটি নির্ভর করে আপনার পাকস্থলিতে কী পদার্থ দিয়ে পাথর তৈরি হচ্ছে তার উপর। পেটের ডানদিকে যকৃতের পেছনে পিত্তথলি থাকে, পিত্তরস তৈরি করা যার কাজ। পাথর জমা হয় এ পিত্তথলিতে। গবেষণায় দেখা গেছে: কোলেস্টেরল, ক্যালসিয়াম এবং বিলিরুবিনের সংমিশ্রণে এই পাথরগুলো তৈরী হয়। এছাড়াও কোনো কোনো এলোপ্যাথিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, খাবারে মিশ্রিত নানা ধরণের ক্ষতিকর রাসায়নিক, প্রক্রিয়াজাত চবিজাতীয় খাবার ইত্যাদিও পিত্তথলিতে পাথর জমা হবার মুল কারন হিসেবে কাজ করে। সুতরাং ঔষধ সেবনে সাবধান হোন। হোটেল রেস্তোরার খাবারকে না বলুন। প্রক্রিয়াজাত খাবারও জরুরী প্রয়োজন ছাড়া খেতে যাবেননা। খাবারের সাথে খোসাসহ শশা রাখুন। এটি দুবল পাথরকে গলিয়ে দেয়। সপ্তাহে দু’এক দিন সিয়াম পালনের অভ্যাস করুন। সিয়ামের মাস সমাগত। এটি আপনার শরীরের জন্যও কল্যাণবহ হোক।
|
|||
بسم الله
|
|||
بسم الله الرحمن الرحيم وَ قَالُوْا لَوْ لَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْهِ مَلَكٌ وَ لَوْ اَنْزَلْنَا مَلَكًا لَّقُضِیَ الْاَمْرُ ثُمَّ لَا یُنْظَرُوْنَ সুরা আল আন আম, আয়াত ৮ অর্থ: তারা বলে, এ নবীর কাছে কোন ফেরেশতা পাঠানো হয় না কেন? (টীকা ৫) যদি ফেরেশতা পাঠাতাম, তাহলে এতদিনে কবেই ফায়সালা হয়ে যেতো, তখন তাদেরকে আর কোন অবকাশই দেয়া হতো না। (টীকা ) ৬
|
|||
এক: ডোনাল্ড ফ্লাড এর জন্ম আমেরিকায়। পেশায় ইংরেজির শিক্ষক। ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এ তিনি তার পড়াশুনা সম্পন্ন করেন। চাকুরীর সুবাদে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গমন করলে সেখানেই তার জীবন নদী মোড় পরিবর্তন করে। অর্থাৎ মুসলিম হন তিনি। কিভাবে বা কোন জিনিসটি তাকে ইসলামে আকৃষ্ট করলো এ প্রশ্নের জওয়াবে তিনি বলেন: “জন্মসুত্রে আমি ছিলাম খৃষ্ঠান। মানুষের বয়স এবং শিক্ষা দীক্ষা যখন বাড়ে, জীবন ও জগত সম্পর্কে তার কৌতুহলও বাড়ে। আমিও এর ব্যতিক্রম ছিলামনা। আমারও কৌতুহল বেড়েই চলছিল। বিশেষ করে আমার নিজ ধর্ম বিষয়ে। যে প্রশ্নের আমি কোনো জওয়াব খুজে পাচ্ছিলাম না, তাহলো: এটি কেমন করে সম্ভব যে, আল্লাহ নিজেই যীশু (অর্থাৎ মানুষ হয়েছেন) হয়েছেন, যাকে তিনি নিজে সৃষ্টি করেছেন এবং নিজেই নিজের দুর্ভোগ অনুমোদন করেছেন অত:পর তারই সৃষ্ট সত্তার (মানুষের) হাতে কুরবানী হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন? তাছাড়া, এ প্রশ্নও আমাকে হতবুদ্ধি করে দিচ্ছিল যে, সৃষ্টিকর্তা নিজেই যীশু ছিলেন। কিংবা যীশু ছিলেন আল্লাহর পুত্র। আমার বিজ্ঞানমনস্ক মন এ বিষয়টির কোনই কুল কিনারা যেন খুজে পাচ্ছিলনা।
|
|||
শুয়োপোকা (Caterpillar) এবং ক্যাকটাস (Cactus) এর গল্প বেশ পুরনো। সৃষ্টিকৃলের প্রতি আমাদের মহান প্রভু আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের করুণা ও ভালোবাসা, যখন যা প্রয়োজন তা দিয়ে কিভাবে তিনি ক্রমধারা অবলম্বন করে তামাম মাখলুকাতের প্রয়োজন পূরণ করেন, তদুপরি তার সৃষ্টিকেও তার পুর্ণতায় পৌছান তার এক অনবদ্য চিত্র লেখক গল্পটিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। যতটা জানা যায়, এ গল্প রচনার সময় তিনি ইসলাম সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা পাননি। যদি এ দ্বীন তার অন্তরকে আলোকিত করতো তাহলে হয়তো অন্য কায়দায় আরও মুগ্ধকর উপমার ব্যঞ্জনায় এ কাহিনীকে আমরা পেতাম। যাহোক, গল্পটি এই: এক ব্যক্তি স্রষ্টার কাছে ফুল ও প্রজাপতি চাইল। স্রষ্টা তাকে ফুল ও প্রজাপতি দিলেননা। দিলেন একটি ক্যাকটাস ও একটি শুয়োপোকা। সে অবাক এবং কিছুটা মনক্ষুন্নও হলো। চাইলাম ফুল আর প্রজাপতি। আর, আমাকে দেয়া হলো শুয়োপোকা, ক্যাকটাস।
|
|||
নাম: জো পল ইকন। ইসলাম কবুলের পর তিনি সালেহ নাম গ্রহণ করেন। জন্মস্থান: ফিলিপাইন। তিনি তার ইসলামে আসার কাহিনী এভাবে বর্ণনা করেন: “আমার জন্ম রোমান ক্যাথলিক পরিবারে। ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলতে পারিবারিকভাবে আমাদেরকে খুবই কড়া শাসনে রাখা হতো। ইলেমেন্টারী স্কুলে পড়াবস্থায় আমি গীর্জার গায়কদলের একজন মেম্বার ছিলাম। মেরীর বিভিন্ন ধরণের মুর্তি আমার সাথে থাকতো। যেমন: কুমারী মেরী, মেরী ম্যাগডালেন বা চরিত্র সংশোধনকারী মেরী, নিস্কলংক মেরী ইত্যাদি। স্কুল শেষ করে যখন আমি কলেজে ভর্তি হলাম তখন আমার ধর্মীয় চিন্তায় একটি পরিবর্তন আসে। একদিন কলেজের একটি অনুষ্ঠানে পাদ্রী বাইবেল পড়ছিলেন। আমাদের সবার হাতেও ছিল একটি করে বাইবেল। আমি বাইবেলে অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে, এ গ্রন্থে বার বার মুর্তিপুজার ব্যাপারে নিষেধ করা হচ্ছে অথচ আমরা নিজেরাই দিন রাত মেরীর মুর্তি বানিয়ে চলেছি। এ বৈপরিত্য আমাকে ব্যথিত করে। আমি পরের দিনই রোমান ক্যাথলিক চার্চে ইস্তফা দিয়ে প্রোটেষ্ট্যান্ট খৃষ্টান পরিচয় গ্রহণ করি।
|
|||
আলিম হিসেবে স্বীকৃতি পাবার জন্য শর্ত: আরবী আলিম শব্দটির অর্থ জ্ঞানী। এ অর্থে যিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে জ্ঞান অর্জন করেন তাকে عالم في الطب বা علماء الطب যিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে জ্ঞান অর্জন করেন তাকে عالم فلكي বলা হয়। ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু বাংলাদেশে আলিম শব্দটি এক ভিন্ন অভিধায়, ভিন্ন অর্থ প্রয়োগে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয়, যার কুরআন সুন্নাহর জ্ঞান আছে কিংবা যিনি দ্বীনি মাদরাসা থেকে টাইটেল নিয়েছেন কেবলমাত্র তিনিই আলিম। কিম্বা তিনি অবশ্যই আলিম। সে যাই হোক, আমি বলছিনা, এটি দোষের। দোষের হচ্ছে তখন, যখন إن العلماء ورثۃ الانبياء 'আলিমগন নাবীদের উত্তরাধিকারী' - - হাদিসটি আউড়িয়ে আলিম পদবাচ্যে ভূষিত হবার যোগ্য নন, এমন ব্যক্তিকেও আলিম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র সামনে রেখে উল্লেখিত এ হাদীস + আলিম শব্দ টি নিয়ে পর্যালোচনা করলে স্বত ই প্রশ্ন জাগে:
|
|||
