বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ‘নামের বড়াই করোনাকো নাম দিয়ে কি হয় নামের মাঝে পাবেনাকো সবার পরিচয়’ এটি একটি গানের কথা। কথাগুলো ক্ষেত্র বিশেষে হয়তোবা আংশিক সত্য, তবে সবসময় নয়। যদি হতো তাহলে নামের বদলে সবত্রই সকলে নাম্বার ব্যবহার করতেন। নামের মাঝে সবার পরিচয় না পাওয়া গেলেও আবার এ নামের মাধ্যমেই মানুষের গুণ বা চারিত্রিক ভিন্নতার কথাগুলো মানুষ জানতে পারে। উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে ‘আল ফারুক’, আবু বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে ‘আস সিদ্দিক’ বিশেষণ এরই প্রমাণ। সুতরাং মানতে হবে, নামে অনেক কিছু হয়। নাম মানুষের আকীদা, আদর্শগত অবস্থান, জাতীর নিশানী এবং দ্বীন-এর পরিচয় ব্যক্ত করে। নামের ভেতরে মিশে থাকে মানুষের অনেক অভিপ্রায়, অনেক স্বীকারোক্তি। আর একারনেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে কেউ এলে তিনি তার নাম জিজ্ঞেস করতেন। পছন্দ হলে সন্তোষ্ট হতেন। আর না হলে নাম পরিবর্তন করে দিতেন।
|
|||
কুরআন থেকে হেদায়াত পেতে চাইলে এর পাঠককে আরও যা হ্রদয়ংগম করা জরুরী তা হচ্ছে: আল্লাহ যদি মানবকুলের বাসনা পূরণার্থে দুনিয়াতেই পাপীর শাস্তি এবং পূণ্যবানের পুরস্কারের ব্যব্স্থা করেন তাহলে কে সত্যপথ অবলম্বন করে আছে, আর কে ভ্রান্তপথ – তা সুস্পষ্ট হয়ে যায় বটে, কিন্তু এটি করলে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের (যে জন্য আল্লাহ এ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন) কোন মূল্য থাকেনা। কুরআনের বক্তব্যও অর্থহীন প্রমাণীত হয়। আরও যে চির সত্যটি তাকে অনুধাবন করতে হবে তা হচ্ছে: এ দুনিয়া প্রাচীন রোমান সম্রাটদের রংগভূমির মতো কোনো coliseum বা এ জাতীয় কিছু নয়। সত্য ও মিথ্যার মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধিয়ে, মানুষকে পরস্পরের মধ্যে লড়াই করিয়ে আনন্দে অট্রহাসি হাসার জন্য এ ভুবন সৃজিত হয়নি। বরং আল্লাহ এখানে মানুষ সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষার নিমিত্ত। এটা দেখার জন্য যে, কে কেমন কাজ করে। যেমন, তিনি বলেছেন: “তিনিই সেই সত্তা, যিনি জন্ম এবং মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, এটা পরীক্ষা করার জন্য যে, কার কর্ম ভাল” (সুরা আল মুলক ১-২)।
|
|||
কুরআন পাঠকের জন্য শর্তাবলী: সাধারণত: কোন বই পুস্তক অধ্যয়ন করলে আমরা দেখি যে, তাতে রয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু। লেখক ঐ বিষয়বস্তুর উপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন অধ্যায় ও অনুচ্ছেদ বিভক্ত করে বিন্যাসের ক্রমানুসারে এক একটি বিষয়ের উপর তত্ব বা তথ্য সরবরাহ করে থাকেন। কুরআন কারিম কিন্তু তেমনটি নয়। কুরআন পাঠ শুরু করলে দেখা যায় যে, একটি বিষয়বস্তুর পর আকস্মিকভাবে অন্য একটি প্রসংগের আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। বক্তব্য বিষয় বার বার মোড় পরিবর্তন করছে। বিষয়ভেদে আলোচনার বিন্যাস বা বক্তব্যকে ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায় বা অনুচ্ছেদে বিভক্ত করার কোন চিহ্নও কোথাও নেই। এককথায় বই পত্র যেভাবে লিখা হয় এ গ্রন্থ মোটেও তেমন নয়। একজন পথহারা ব্যক্তি এসব দেখে সংশয়াপন্ন হয়ে পড়েন। ভাবেন – এ-ই কি সেই কিতাব যার সম্পর্কে জোর গলায় এতো কিছু বলা হচ্ছে। এবং আরও কত কি!
|
|||
১৬) ড: মরিস বুকাইলি আরও লিখেছেন:
“আমরা দেখেছি, বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে
|
|||
১৫) কুরআনে বৈজ্ঞানিক তথ্য: কুরআন কারিমের আর এক বিস্ময়কারীতা হচ্ছে এ গ্রন্থে বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলীর উপস্থিতি। যা কিনা আধুনিক বিশ্ব, বিশেষ করে বস্তুবাদের অনুসারীদের মুখে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
কুরআনে উল্লেখিত এসকল বিষয়াবলী নিয়ে
|
|||
১৩) মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
|
|||
১০) মানুষ নাবী হবার দাবী করে কোনও স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে। নেতৃত্ব, ধন-সম্পদ অর্জন, প্রতিহিংসা, সত্য নাবীকে টেক্কা দিয়ে আপন স্বার্থ উদ্ধার ইত্যাদি মিথ্যা নবুয়াতের দাবীদারদের একমাত্র লক্ষ্য হয়ে থাকে। কিন্তু মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনেতিহাস ভিন্ন কথা বলে। পচিশ বছর বয়সে তিনি মাক্কার শ্রেষ্ঠ ধনী মহিলাকে (খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা) বিয়ে করেন। তিনি চাইলে এ স্ত্রীর অর্থ সম্পদ ব্যবসায়ে খাটিয়ে আরবের ধনকুবের হতে পারতেন এবং এর সাথে নবুয়াতের তকমা যোগ করে হতে পারতেন পুরোহিতসম্রাট। তার সামনে অবারিত ছিলো বসত বাটি সমৃদ্ধ বিমুগ্ধ দুনিয়া। কিন্তু তাকে সে বিমুগ্ধ দুনিয়ার ধারে কাছেও ঘেষতে দেখা যায়নি।
|
|||
৬) কুরআনের সংখ্যাতাত্বিক ও গাণিতিক বন্ধনের রহস্যটি একটি আশ্চযজনক বিষয়। এতে রয়েছে উনিশ সংখ্যার এক অদ্ভুত মিল। আপনি যদি এ মিল রেখে কুরআন রচনা করতে যান, তাহলে আপনাকে ৬০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ বার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। অর্থাৎ কুরআন শুরু থেকে শেষ পযন্ত এতবার আপনাকে পড়তে হবে শুধুমাত্র এর গাণিতিক বন্ধনে মিল রাখার জন্য এ বং এ চেষ্ঠার পর কেবলমাত্র একবারই আপনি সফলকাম হবেন। সুতরাং একাজ সম্পন্ন করতে আপনাকে কতো বছর আয়ু পেতে হবে তা সহজেই অনুমেয়। ৭) মানুষের আকল বা বিবেক বুদ্ধির বিরুদ্ধে যায়, কুরআনে এমন কোনো কথা বা নির্দেশনা নেই। যেমন উদাহরণস্বরুপ, কুরআন কারিমে বলা হচ্ছে – একজনের পাপের বোঝা অন্যজন বহন করবেনা। একজনের পাপের কারনে অন্যজনকে শাস্তি দেয়া হবেনা।
|
|||
আপনি যদি একটি যুক্তি নিরপেক্ষ মন নিয়ে আল কুরআনুল কারিম অধ্যয়ন করেন তাহলে এটি স্বীকার করবেন যে, কোনো মানুষের পক্ষে এধরনের গ্রন্থ রচনা সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয়, তারই কিছু arguments নীচে তুলে ধরা হচ্ছে: ১)মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লিখতে পড়তে জানতেননা। যদি তিনি লেখাপড়া জেনে থাকতেন, লোকেরা তাকে বই পড়তে, অধ্যয়ন ও গবেষণা করতে দেখতো তাহলে অবশ্যই অবিশ্বাসীদের জন্য এধরনের সন্দেহ পোষণ করার কোন ভিত্তি থাকতো যে, এসব জ্ঞান অহীর মাধ্যমে নয় বরং জাগতিক মেধা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। (সুরা আল আনকাবুত ৪৮) ২) কুরআনের মতো এমন একটি গ্রন্থ রচনার জন্য শুধুমাত্র লিখাপড়া নয়, এর লেখককে একই সাথে কাব্যিক, সাহিত্যিক, ইতিহাসবেত্তা, জোতিবিদ, আইনবিদ ও চিকিৎসাবিদ হওয়া জরুরী। কারন, এপযন্ত যারাই কুরআনের মতো কিছু একটা লিখার প্রয়াস চালিয়েছেন তারা সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, আরবী ভাষার সমস্ত সৃষ্টিশীলতা, মেধা ও কাব্যজ্ঞান ব্যবহার করেও কুরআনের অনুরুপ কিছু রচনা করা যায়না।
|
|||
নেতৃত্ব এবং কর্তৃত্বও একটি পরীক্ষা, শুধু অভাব অনটন বা বিপদ মুসিবাত নয়। (দ্রষ্টব্য: সুরা আল আম্বীয়া ৩৫)। কিয়ামাতের দিন অধিকাংশ মানুষ এ নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বহেতু জাহান্নামী হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “দুনিয়াতে দশজনেরও নেতা ছিল, এমন ব্যক্তিকে কিয়ামাত দিবসে এরুপ অবস্থায় উত্থিত করা হবে যে, তার দু’হাত তার গলার সাথে বাধা থাকবে। তখন তার ন্যায়নীতি ও নেক কাজ হয় তাকে মুক্ত করবে নতুবা তার অন্যায় অবিচার তাকে জাহান্নামে প্রেরণ করবে”। (মুসনাদ আহমাদ, ইবন হিব্বান)। অন্য এক হাদিসে এসেছে: “কিয়ামাতের দিন আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় এবং নৈকট্যের অধিকারী হবেন আল্লাহভীরু ন্যায়পরায়ণ শাসক, নেতা এবং বিচারকগন। আর সবচেয়ে ভয়াবহ আযাবের সম্মুখীন হবে যালেম শাসক, নেতা ও বিচারকগন। (মুসলিম, তিরমিযি। বর্ণনাকারী: আবু সাঈদ আল খুদরী রা:)।
|
|||
