ভাবুক এ মন, ভাবে
কত কিছু নিয়ে
সমাজের বিন্দুমাত্র উপকারও
হয়ে উঠে না আমায় দিয়ে
ধূলিকণা ও শিশির বিন্দু
পাড়িয়ে আমরা উঁচু তলায়
পথের শিশুরা পথেই পড়ে
রয় ভাবনাগুলো আমায় কাঁদায়,
ভাবায়, অথচ একটিও
উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় না আমার
অপারগতা, ব্যর্থতা,
টানাপোড়ন আরও কত কিছু
অর্থাভাব ছাড়ে না ভাবুক
হৃদয় সহ এ দেহের পিছু।
লেখক
গভীরভাবে পথ শিশুদের নিয়ে ভেবেছেন, কিছু করার স্পৃহা মনে কিন্তু তিনি তার অপারগতা
আর ব্যর্থতাকেও সামনে এনেছেন। বর্তমান সরকারের পদক্ষেপে বলতেই হয় লেখকের সেই
স্পৃহা, সেই ভাবনা আজ বাস্তবায়িত হতে চলেছে। বৃথা যায়নি কবিতার চরণগুলোর মর্মকথার।
সম্প্রতি পথ শিশুদের নিয়ে সরকারের গৃহিত
পদক্ষেপ শুধু প্রসংশার দাবি রাখে না এটি সময়ের দাবি বটে। তাই সময়ে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে
জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রম।
২০১০
সালে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে
‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রম শুরু হলেও স্কুলের
শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সালে।
ওই
বছরে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা দেশের ব্যাংকগুলোতে ৩০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আমানত রাখে।
সর্বশেষ
চলতি বছরের জুন শেষে ৩ হাজার ৪৬৭ কর্মজীবী শিশু ও পথশিশু মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব
খুলেছে। তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে সম্মেলিতভাবে ব্যাংকে
জমা হয়েছে ২২ লাখ ৮ হাজার ৮৪৮ টাকা। দেশের ১৭টি বাণিজ্যিক
ব্যাংকে তাদের এ টাকা জমা রয়েছে। সঞ্চয়ের মনোভাব
নিয়ে বড়দের সঙ্গে,
স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসছে এখন।
সর্বশেষ
প্রান্তিকে
(এপ্রিল-জুন) ২৭৮ জন কর্মজীবী
ও পথশিশু নতুন করে ব্যাংক হিসাব খুলেছে।
এই
তিন মাসে কর্মজীবী ও পথশিশুরা ব্যাংকে জমা করেছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮২ টাকা।
কেন্দ্রীয়
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে,
বিভিন্ন স্থানে (যেমন-বস্তি,
রাস্তাঘাট, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড,
লঞ্চঘাট ও ফুটপাথে) বসবাসরত পথশিশু এবং কর্মজীবী
শিশু-কিশোরদের ব্যাংকিং সেবায় আনার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সঞ্চয়
প্রবণতা তৈরি, কষ্টে উপার্জিত অর্থের সুরক্ষা, পথভ্রষ্ট হওয়ার প্রবণতা হ্রাস করাসহ তাদের বৃহত্তর কল্যাণে ব্যাংক হিসাব খোলার
মহতী উদ্যোগ নেন সাবেক গবর্নর ড. আতিউর রহমান।
এর
পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ এক নির্দেশনার মাধ্যমে মাত্র ১০ টাকা দিয়ে পথশিশুদের
ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ
নির্দেশনার পর ব্যাংকগুলো বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কর্মজীবী ও পথশিশুদের
হিসাব খোলার উদ্যোগ নেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে
এ ব্যাংক হিসাব খোলার কার্যক্রম শুরু হয় ওই বছরের ৩১ মে।
ব্যাংক
হিসাব খোলা পথশিশুদের বয়স ১৮ বছর হলে তারা ব্যাংক থেকে জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা পাবে।
যা
দিয়ে তারা ছোটখাটো ব্যবসা করতে পারবে। সাড়ে ৭ লাখ পথশিশুর
মধ্যে মাত্র সাড়ে ৩ হাজারের মতো ব্যাংক হিসাবের আওতায় এসেছে।
বাকি
শিশুদেরও ব্যাংক সেবার আওতায় আনতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতার
অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর উচিত এসব শিশুদের ব্যাংক সেবার আওতায় এনে উন্নত ভবিষ্যত গড়ার
সুযোগ করে দেয়া।