'আতাউর রহমান সিকদার' -এর ব্লগ
আপনি যদি সহীহ উৎস থেকে কুরআন, সুন্নাহর কথাগুলো অধ্যয়ন করেন, তাহলে দেখবেন, যুক্তি ও আকল সমর্থন করেনা – এমন কোনো আদেশ নিষেধ এতে নেই। কিন্তু মানুষ বুঝতে ভুল করে। নীচে এরই কিছু উদাহরণ আমি পেশ করছি: এক: একবার আয়িশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) জানতে পারলেন যে, আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) লোকদেরকে বলছেন: ‘নামাযের মধ্যে পুরুষের সামনে দিয়ে যদি কোনো মহিলা, গাধা এবং কুকুর অতিক্রম করে তাহলে নামায নষ্ট হয়ে যাবে’। এ কথা শুনে তিনি খুব রেগে গেলেন এবং বললেন: তোমরা আমাদের নারীদেরকে কুকুর আর গাধার সমান করে দিলে? আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে পা ছড়িয়ে শুয়ে থাকতাম, ঘুমিয়ে থাকতাম (ঘরে পযাপ্ত জায়গা না থাকার কারনে) আর তিনি নামায পড়তে থাকতেন। যখন সিজদায় যেতেন, হাত দিয়ে টোকা দিতেন আর আমি পা সরিয়ে নিতাম। তিনি উঠে গেলে আবার পা ছড়িয়ে দিতাম (বুখারী, ৬ষ্ট খন্ড, পৃ: ৭৩) অনেক সময় প্রয়োজন হলে শরীর কাত করে সামনে দিয়ে বের হয়ে যেতাম (বুখারী, বাব আস সারীর) (সুত্র: সীরাতে আয়িশা রা: পৃ: ২৯১, সাইয়েদ সুলাইমান নদভী রহ) দুই:
|
|||
পরপুরুষ বা পরনারীর সৌন্দয অবলোকনে তৃপ্তিলাভ, কন্ঠস্বর শুনে কর্ণকুহরে আনন্দ উপভোগ, মিষ্টিস্বরে কথোপকথন, পুন: পূন: দৃষ্টি – মানব রচিত আইন আদালতের চোখ এসবকে কোনো অপরাধ গণ্য না করলেও ইসলামে তা বড়ো ধরণের গর্হিত কাজ। কারণ এহেন মনের চুরির ফলশ্রুতিতেই মানব সমাজ পরকীয়া, দাম্পত্য জীবনে অশান্তি এবং ঘর ভাংগার মতো বিপদের সম্মুখীন হয়। একটি হাদিসে বলা হয়েছে: “চক্ষুদ্বয় ব্যভিচার করে, দৃষ্টি ব্যভিচার করে, হস্তদ্বয় ব্যভিচার করে এবং স্পর্শ এ দু’অংগের ব্যভিচার, পদদ্বয় ব্যভিচার করে, এ পথে হেটে যাওয়া এ দু’অংগের ব্যভিচার, কথোপকথন জিহবার ব্যভিচার, কামনা বাসনা মনের ব্যভিচার। অবশেষে যৌনাংগ এইসকলের সত্যতা বা অসত্যতা প্রমাণ করে”। (বুখারী ৬১৫৯, মুসলিম, আবু দাউদ ২১৪৯)
|
|||
নামকরণে পরামর্শ – পব চার। ৭৪- সাবের (সোয়াদ+আলিফ+বা+রা) অর্থ: ধৈযশীল। আইয়ুব আ: এর লাকব। ৭৫- সাদেক (সোয়াদ+আলিফ+দাল+ক্কাফ) অর্থ: সত্যবাদী ৭৬- সালেহ (সোয়াদ+আলিফ+লাম+হা)অর্থ: ন্যায়পরায়ণ ৭৭- সালাহ (সোয়াদ+লামআলিফ+হা) অর্থ: সততা ৭৮- সুহাইব (সোয়াদ+হা+ইয়া+বা) অর্থ: লালচে রং ৭৯- আদেল। অর্থ: ন্যায়পরায়ণ ৮০- আতেফ। অর্থ: স্নেহশীল, দয়ালু ৮১- আসেম। (আইন+আলিফ+সোয়াদ+মীম) অর্থ: রক্ষক, অভিভাবক ৮২- আযযাম। অর্থ: দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ব্যক্তি ৮৩- আফিফ। অর্থ: পূণ্যবান ৮৪- আলা (আইন+লামআলিফ+হামযা আলাস সতর) উন্নত। ৮৫- গালিব। অর্থ: জয়ী ৮৬- ফাতেহ। অর্থ: বিজয়ী ৮৭- ফায়েয। অর্থ: কৃতকায। ৮৮- ফাইয়াদ (ফা+ইয়া+আলিফ+ধোয়াদ)অর্থ: উদার ৮৯- ফয়সল। (ফা+ইয়া+সোয়াদ+লাম) অর্থ: মধ্যস্থতাকারী ৯০- নায়েফ। অর্থ: উন্নত ৯১- নাবিল। অর্থ: মহানুভব
|
|||
যাহোক, আমরা জানলাম যে, সন্তানের জন্যে একটি সুন্দর অর্থবোধক নাম কতটা জরুরী। এবার সম্মানীত পাঠক/পাঠিকাদের অনুরোধ রক্ষার্থে নীচে আমি কতিপয় বিশুদ্ধ আরবী নামের একটি তালিকা পেশ করছি। বাংলার পাশে আরবী লিখে সাজাতে গেলে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন। তাই শুধু বাংলাটি লিখলাম। তবে কেউ কোনো নামের আরবী বানান জানতে চাইলে দেয়া হবে। ছেলেদের নাম: ১- মুহাম্মাদ । অর্থ: প্রশংসিত, খ্যাতিমান। ২- আহমাদ । অর্থ: অত্যন্ত প্রশংসনীয়, প্রশংসাকারী। নোট: আমাদের দেশে কেউ কেউ বিকৃত করে ‘আহমেদ’ বা ‘আহম্মেদ’ লিখে। এভাবে লিখা ভুল। কারন, কুরআনে এ শব্দটি ‘আহমাদ’ উচ্চারণে এসেছে। (সুরা সফ ৬) ইচ্ছে করে বিকৃত করা মোটেই ভালো আচরণ নয়। ৩- আবদুল আযিয। অর্থ: মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর দাস বা বান্দা ৪- আবদুর রাহমান। অর্থ: পরম করুণাময় আল্লাহর দাস বা বান্দা ৫- আবদুর রাহীম। অর্থ: পরম কৃপাশীল আল্লাহর দাস বা বান্দা ৬- আবদুল মালিক। অর্থ: মহা অধিপতি আল্লাহর দাস বা বান্দা
|
|||
আর এক বাংলাদেশী বন্ধু (মাক্কায়) তার মেয়ের নাম রেখেছন ‘আশারা মুবাশ্বিরা’। আশারাহ মুবাশ্বিরাহ অর্থ ‘সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন’। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে দশজন সাহাবীকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন, তাদেরকে একত্রে আশারাহ মুবাশ্বিরাহ বলা হয়। যাহোক একবার তিনি তার এ মেয়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান এবং সিরিয়ালে নাম লিখিয়ে বসে রইলেন। ডাক্তার এর এসিস্টেন্ট আশারাহ মুবাশ্বিরাহ বুঝতে না পেরে (অর্থাৎ তার ধারণায়ও আসেনি যে, এটি কারোর নাম হতে পারে) শুধু মুবাশ্বিরাহ লিখে ওয়েটিং – এ থাকতে বলেন। তিন ঘন্টা পার হয়েছে, তার মেয়েকে ডাকা হয়না। অনেক কষ্টে তিনি এসিস্টেন্ট এর কাছে গেলেন। এসিস্টেন্ট রাগত স্বরে বললেন: ইয়া গাবি, নাদাইতুল ইসম সিত্তাহ মাররাত। খালাছ। ইনতাহা আদদাওয়াম (ওহে মুর্খ বোকা, তোমার মেয়ের নাম ধরে আমি ডেকেছি ছয়বার, আজকের মতো ডিউটি শেষ)। মুবাশ্বিরা মুবাশ্বিরা বলে ছয়বার ডাকা হয়েছিল কথাটি মিথ্যা নয়। কিন্তু আমার বন্ধুটি বুঝতে পারেননি, তিনি তিন ঘ্ন্টা ধরে কান উৎকর্ণ করে ছিলেন – কখন ডাকা হবে আশারা মুবাশ্বিরা।
|
|||
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ‘নামের বড়াই করোনাকো নাম দিয়ে কি হয় নামের মাঝে পাবেনাকো সবার পরিচয়’ এটি একটি গানের কথা। কথাগুলো ক্ষেত্র বিশেষে হয়তোবা আংশিক সত্য, তবে সবসময় নয়। যদি হতো তাহলে নামের বদলে সবত্রই সকলে নাম্বার ব্যবহার করতেন। নামের মাঝে সবার পরিচয় না পাওয়া গেলেও আবার এ নামের মাধ্যমেই মানুষের গুণ বা চারিত্রিক ভিন্নতার কথাগুলো মানুষ জানতে পারে। উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে ‘আল ফারুক’, আবু বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে ‘আস সিদ্দিক’ বিশেষণ এরই প্রমাণ। সুতরাং মানতে হবে, নামে অনেক কিছু হয়। নাম মানুষের আকীদা, আদর্শগত অবস্থান, জাতীর নিশানী এবং দ্বীন-এর পরিচয় ব্যক্ত করে। নামের ভেতরে মিশে থাকে মানুষের অনেক অভিপ্রায়, অনেক স্বীকারোক্তি। আর একারনেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে কেউ এলে তিনি তার নাম জিজ্ঞেস করতেন। পছন্দ হলে সন্তোষ্ট হতেন। আর না হলে নাম পরিবর্তন করে দিতেন।
|
|||
কুরআন থেকে হেদায়াত পেতে চাইলে এর পাঠককে আরও যা হ্রদয়ংগম করা জরুরী তা হচ্ছে: আল্লাহ যদি মানবকুলের বাসনা পূরণার্থে দুনিয়াতেই পাপীর শাস্তি এবং পূণ্যবানের পুরস্কারের ব্যব্স্থা করেন তাহলে কে সত্যপথ অবলম্বন করে আছে, আর কে ভ্রান্তপথ – তা সুস্পষ্ট হয়ে যায় বটে, কিন্তু এটি করলে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের (যে জন্য আল্লাহ এ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন) কোন মূল্য থাকেনা। কুরআনের বক্তব্যও অর্থহীন প্রমাণীত হয়। আরও যে চির সত্যটি তাকে অনুধাবন করতে হবে তা হচ্ছে: এ দুনিয়া প্রাচীন রোমান সম্রাটদের রংগভূমির মতো কোনো coliseum বা এ জাতীয় কিছু নয়। সত্য ও মিথ্যার মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধিয়ে, মানুষকে পরস্পরের মধ্যে লড়াই করিয়ে আনন্দে অট্রহাসি হাসার জন্য এ ভুবন সৃজিত হয়নি। বরং আল্লাহ এখানে মানুষ সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষার নিমিত্ত। এটা দেখার জন্য যে, কে কেমন কাজ করে। যেমন, তিনি বলেছেন: “তিনিই সেই সত্তা, যিনি জন্ম এবং মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, এটা পরীক্ষা করার জন্য যে, কার কর্ম ভাল” (সুরা আল মুলক ১-২)।
|
|||
কুরআন পাঠকের জন্য শর্তাবলী: সাধারণত: কোন বই পুস্তক অধ্যয়ন করলে আমরা দেখি যে, তাতে রয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু। লেখক ঐ বিষয়বস্তুর উপর ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন অধ্যায় ও অনুচ্ছেদ বিভক্ত করে বিন্যাসের ক্রমানুসারে এক একটি বিষয়ের উপর তত্ব বা তথ্য সরবরাহ করে থাকেন। কুরআন কারিম কিন্তু তেমনটি নয়। কুরআন পাঠ শুরু করলে দেখা যায় যে, একটি বিষয়বস্তুর পর আকস্মিকভাবে অন্য একটি প্রসংগের আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। বক্তব্য বিষয় বার বার মোড় পরিবর্তন করছে। বিষয়ভেদে আলোচনার বিন্যাস বা বক্তব্যকে ভিন্ন ভিন্ন অধ্যায় বা অনুচ্ছেদে বিভক্ত করার কোন চিহ্নও কোথাও নেই। এককথায় বই পত্র যেভাবে লিখা হয় এ গ্রন্থ মোটেও তেমন নয়। একজন পথহারা ব্যক্তি এসব দেখে সংশয়াপন্ন হয়ে পড়েন। ভাবেন – এ-ই কি সেই কিতাব যার সম্পর্কে জোর গলায় এতো কিছু বলা হচ্ছে। এবং আরও কত কি!
|
|||
১৬) ড: মরিস বুকাইলি আরও লিখেছেন:
“আমরা দেখেছি, বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে
|
|||
১৫) কুরআনে বৈজ্ঞানিক তথ্য: কুরআন কারিমের আর এক বিস্ময়কারীতা হচ্ছে এ গ্রন্থে বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলীর উপস্থিতি। যা কিনা আধুনিক বিশ্ব, বিশেষ করে বস্তুবাদের অনুসারীদের মুখে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
কুরআনে উল্লেখিত এসকল বিষয়াবলী নিয়ে
|
|||
