রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবী যায়িদ ইবনুল হারিছার (রাঃ) জীবনের একটি ঘটনা। যায়িদ (রাঃ) আট বছর বয়সে ছিনতাই হয়ে যান। তাকে বিক্রি করে দেয়া হয় ওকাজের মেলায়। মেলা থেকে হাকিম ইবনু হিযাম ইবনু খুয়াইলিদ তাকে কিনে নিয়ে উম্মুল মু”মীনিন খাদিজা (রাঃ) কে উপহার দেন। খাদিজা (রাঃ) অতঃপর এ বালককে ক্রীতদাসরুপে উপহার স্বরুপ প্রদান করেন রাসুলের (সাঃ) নিকট। আল্লাহর রাসুলের সা. ঘরে এ বালক বড় হতে লাগলেন। ওদিকে যায়িদের পিতা, মাতা পুত্রশোকে ছিলেন অস্থির। অনেক খোজাখুজির পর তারা খবর পেলেন যে তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তান মাক্কায় রাসুলুল্লাহর (সাঃ) বাড়িতে। যায়িদ তখন কৈশোরে পদার্পন করেছেন। যায়িদের পিতা ও চাচা মুক্তিপণ নিয়ে রাসুলের ঘরে এসে হাজির হলেন। বললেনঃ ওহে আবদুল মুত্তালিবের বংশধর! আপনারা আল্লাহর ঘরের প্রতিবেশী, অসহায়ের সাহায্যকারী, ক্ষুধার্তকে অন্নদানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীকে আশ্রয় দানকারী। আপনার কাছে আমাদের যে ছেলেটি রয়েছে তার ব্যপারে আমরা এসেছি। আমাদের প্রতি অনুগ্রত করুন এবং ইচ্ছামত তার মুক্তিপণ নির্ধারন করুন। মুহাম্মাদ (সাঃ) বললেনঃ মুক্তিপণের চেয়ে উত্তম কিছু যদি আপনাদের জন্যে নির্ধারণ করি তা কি আপনারা চান? কি তা? আমি তাকে আপনাদের সামনে ডাকছি। স্বেচ্ছায় সে নির্ধারণ করুক, আমার সাথে থাকবে, না আপনাদের সাথে যাবে। যদি সে আপনাদের সাথে যেতে চায় মুক্তিপণ ছাড়া তাকে নিয়ে যাবেন। আর যদি আমার সাথে থাকতে চায় তাহলে আমি এমন লোক নই যে কেউ আমার কাছে থাকতে চাইবে আর আমি তাকে দুরে ঠেলে দেব। তারা বললেনঃ আপনি অত্যন্ত ন্যায় বিচারের কথা বলেছেন। মুহাম্মাদ (সাঃ) যায়িদকে ডাকলেন। জিজ্ঞেস করলেনঃ এ দু’ব্যক্তি কারা? যায়িদ বললঃ ইনি আমার পিতা আর উনি চাচা। মুহাম্মাদ (সাঃ) বললেনঃ তুমি ইচ্ছা করলে উনাদের সাথে যেতে পার আর যদি আমার সাথে থাকতে চাও তাহলে তাও পার। কোনরকম ইতস্ততঃ না করে যায়িদ বললঃ আমি আপনার সাথেই থাকবো। যায়িদের পিতা বললেনঃ যায়িদ, তোমার সর্বনাশ হোক, পিতা মাতাকে ছেড়ে তুমি দাসত্ব বেছে নিলে? যায়িদ বললঃ এ ব্যক্তির চরিত্রে আমি এমন কিছু পেয়েছি যা আমি অন্য কোথাও দেখিনি। তাই তাকে ছেড়ে আমি যেতে পারিনা। (এটি রাসুলুল্লাহর (সাঃ) নবুয়াতপুর্ব ঘটনা) আল্লাহর দ্বীন তথা রাসুল (সাঃ) এর আদর্শ প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজ যারা করছেন তাদের জন্যে এক বড়ো গাইড লাইন রয়েছে এতে। আমি আল্লাহর পথে মানুষকে ডাকব, আর অধীনস্তদের প্রতি আমার ব্যক্তিগত আচার আচরণ হবে অন্য দশটি নামকাওয়াস্তে মুসলিমের মতোই - এটি কখনো কাম্য হতে পারেনা।
|
|||
Rate This |
||
|